বিশেষ প্রতিনিধি, জি নিউজ: আজ মে দিবস,বিশ্বের কোটি কো টি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও দাবি আদায়ের মহান মে দিবস আজ। ঐতিহাসিক মে দিবস এ দিনটাকে শ্রমিকরা যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করবে। এবার ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে দেশে পালিত হবে এ দিবসটি। সাভারের রানা প্লাজা ধসে চার শতাধিক পোশাক শ্রমিকের মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন পুরো দেশ। শ্রমিকদের দাবি আদায়ের সংগ্রামে নির্যাতন-নিপীড়নের স্মারক হিসেবে যখন দিবসটি পালিত হচ্ছে ।ঠিক সেই মুহূর্তে রানা প্লাজার ধ্বংস্তূপের নিচ থেকে বের করে আনা হচ্ছে চাপা পড়া শ্রমিকদের লাশ। গলে পচে যাওয়া লাশের গন্ধ এখন সাভারের বাতাসে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে শিল্পশ্রমিক পেতে সবচেয়ে কম মজুরি দিতে হয়। আর এই একটি মাত্র কারণে বাংলাদেশের সস্তা পোশাকের চাহিদা দিনে দিনে বাড়ছে।
১লা মে শ্রমিকদের ওপর পুলিশ গুলি চালালে বহু শ্রমিক হতাহত হন। পরের বছর প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে দিনটিকে মে দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দিবসটিকে সামনে রেখে প্রেসিডেন্ট এডভোকেট আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট তার বাণীতে বলেন, একটি দেশের উৎপাদন, উন্নয়ন ও সামগ্রিক অগ্রগতিতে শ্রমজীবী মানুষের অবদান অপরিসীম। মেহনতি মানুষের কল্যাণ ও ভাগ্যের পরিবর্তনের সঙ্গে দেশের ভাগ্যোন্নয়ন জড়িত। শ্রমিকের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশেষ করে তাদের ন্যায্য মজুরি, পেশার বিকাশ, কাজের সুষ্ঠু ও নিরাপদ কর্ম-পরিবেশ সৃষ্টি এবং মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অতীব জরুরি। আমি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বিপুল জনগোষ্ঠীকে জনশক্তিতে পরিণত করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান জানাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, মালিক-শ্রমিকের মধ্যে ঐক্য ও সুসম্পর্ক বজায় রাখা ও নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা বিভিন্নমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি। জাতীয় শিশু শ্রমনীতি ২০১০ এবং জাতীয় শ্রমনীতি ২০১২ প্রণয়ন করা হয়েছে। শ্রমবান্ধব এ সরকার শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে লাগসই প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও ব্যবহার এবং উন্নত ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে রূপকল্প-২০২১ বিনির্মাণে বদ্ধপরিকর।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি আশা করি, মহান মে দিবসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রমিক এবং মালিক পরস্পর সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে কল-কারখানার উৎপাদন বৃদ্ধিতে আরও নিবেদিত হবেন। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এক বিবৃতিতে বলেন, মানব সভ্যতার অগ্রযাত্রা ও সমৃদ্ধ অর্থনীতি অর্জনে শ্রমজীবী মানুষের অবদান স্মরণে রেখেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সম্মান ও শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে। শ্রমিকের অধিকার আদায় ও তা সংরক্ষণে আমাদের প্রতিশ্রুতি পালনে আমরা কখনও পিছপা হইনি। বিরোধী নেত্রী তার বাণীতে বলেন, দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি কোন বিবেচনাতেই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অনুকূলে নয়। মানুষ প্রতিনিয়ত তার অধিকার হারাচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে তাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার থেকে। এদিকে মহান মে দিবসকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বুধবার,1 মে 201