সাতক্ষীরায় ১২লাখ টাকার গরু ৫ লাখ ও ৮ লাখ টাকার ইলিশ মাছ ৪ লাখ টাকায় নিলাম
সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ সাতক্ষীরা শুল্ক বিভাগ কাষ্টমস কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে বিজিবির হাতে আটককৃত বিশ লাখ টাকার গরু ও ইলিশ মাছ মাত্র ৯ লাখ টাকায় নামমাত্র নিলামে বিক্রয় করা হয়েছে। এরমধ্যে ১২লাখ টাকার গরু ৫ লাখ টাকা এবং ৮ লাখ টাকার ইলিশ মাছ মাত্র ৪ লাখ টাকায় নিলাম দেখানো হয়। কাস্টমস কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে স্থানীয় কয়েকটি সিন্ডিকেট চক্র এবিভাগের নিলাম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে বলে বছরের পর বছর অভিযোগ রয়েছে। ফলে বাইরের কোন পেষাজীবি ঠিকাদার উক্ত কাস্টমস অফিস থেকে সিডিউল ক্রয় করতে পারেনা। পাশাপাশি সিডিউল ক্রয় করলেও তা জমা দেয়ার সুযোগ হয়না। আর সুযোগ বুঝেই কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও নামমাত্র নিলাম ক্রেতা ছাড়া আর কেউ না থাকায় নিজেদের ইচ্ছেমত নামমাত্র নিলাম দেখিয়ে হাতিয়ে নেয়া হয় লক্ষ লক্ষ টাকা। বছরের পর বছর সরকার বঞ্চিত হচ্ছে মোটা অংকের রাজ¯^ থেকে।
সাতক্ষীরা ৩৮ বিজিবি’র দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, ৩ জুলাই সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারি সীমান্ত থেকে ২৫টি গরু আটক করা হয়। আটক ২৫টি গরুর মুল্যে নির্ধারণ করা হয় ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। যার বাজার মূল্য আরো অনেক বেশি। ওই গরু নিলামে বিক্রি করা হয়েছে মাত্র ৫ লাখ ১ হাজার টাকা। সংশিষ্টদের অভিযোগ, সাতক্ষীরা কাস্টমস অফিসের এক কর্মকর্তার সহযোগিতায় সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের নব্য কোটিপতি মোছলে নামের এক গরু ব্যবসায়ী প্রায় সাড়ে ১১ লাখ টাকার গরু মাত্র ৫ লাখ টাকায় নামমাত্র নিলাম ক্রয় করেছে। আর সে সুযোগেই কাস্টমের ওই কর্মকর্তা হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক লাখ টাকা।
পাশাপাশি বৃহস্পতিবার ভোরে বিজিবি সদস্যরা দেবহটা উপজেলার ধোপাখোলা এলাকা থেকে ৭৯০ কেজি ইলিশ মাছ আটক করে। বিজিবি ওই মাছের মুল্যে নির্ধারণ করে ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা। আটককৃত মাছগুলো বৃহস্পতিবার দুপুরে নিলাম ডাকা হয়। বিপুল পরিমান ইলিশ মাছ নিলাম বিক্রি করা হয়েছে মাত্র ৪ লাখ টাকায়। অভিযোগ কাস্টমস কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় স্থানীয় কয়েকটি সিন্ডিকেট চক্র নামমাত্র দরেই ওই মাছ নিলামে ক্রয় করে। সূত্রগুলোর দাবী, কাস্টমস কর্মকর্তারা সিন্ডিকেট সদস্যদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে কম দামে নিলাম কিনতে সার্বিক সহযোগিতা করে। এতে করে সরকার মোটা অংকের রাজ¯^ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। বছরের পর বছর এই চক্রগুলো কাস্টমসের নিলাম নিয়ন্ত্রণ করে লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক বনেছে। আর পকেট ভরছে কাস্টমস কর্মকর্তাদের।
সাতক্ষীরা ৩৮ বিজিবি ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লে: কর্ণেল এমআর পারভেজ জানান, বিজিবি সদস্যরা জীবনের ঝুকি নিয়ে সীমান্ত এলাকা থেকে মালামাল আটক করে কাস্টমসে জমা দেয়। আর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নিলামের নামে স্থানীয় কয়েকটি সিন্ডিকেট চক্রের সাথে হাত মিলিয়ে তা ভাগবাটোয়ারা করে থাকেন। বিজিবি কর্তৃপক্ষের দাবী নিলামের নামে যেভাবে ভাগবাটোয়ারা হচ্ছে তাতে এসম¯— পন্য ধরে লাভ কি। বিজিবি’র পক্ষ থেকে সাতক্ষীরা কাস্টমস কর্তৃপক্ষের লাগামহীন দূর্ণীতি ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানিয়েছেন।
কাজী নাসির উদ্দীন/ সাতক্ষীরা/জি নিউজ