আরিফুল ইসলাম রিয়াজ; ভোলা প্রতিনিধিঃদ্বীপ জেলা ভোলার একটি ঐতিহ্যবাহী পানীয় খেজুরের রস। রস থেকে তৈরী হয় খেজুরের গুড়। যা ভোলার মানুষের চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হত রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। আর এই ঐতিহ্যটি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। ঘর-বাড়ি তৈরী, ইট ভাটার জ্বালানীর জন্য খেজুরের এই সস্তা গাছটি মানুষে কেটে ফেলছে নিমেষেই। শীতের সকালে শিশির ভেজা ভোরে শিয়ালীদের (খেজুর রস বিক্রেতা) ডাকা ডাকি এখন আর শোনা যায়না। কৃষক এখন আর খেজুরের রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরী করতে পারছেনা। ভোলায় কৃষি জমির সাথে কৃষক খেজুরের গাছ লাগাতেন, শীত আসলেই গাছ কাটার ধুম পড়ত এর পর রাতে গাছে হাড়ি বসানো ভোর হলেই তা সংগ্রহ করার কাজে ব্যস্ততা। এখন আর কিছুই নেই এ অঞ্চলে। খেজুরের রস সংগ্রহ করে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরী করা হত সুমিষ্ট গুড় আর কৃষক তা বিক্রি করত বিভিন্ন হাটে। ক্রেতারা এর স্বাদ ও গন্ধে কিনে নিতেন তা। শীতের সকালে খেজুরের গুড়ের পিঠা, পায়েশ খাওয়ার ধুম পড়তো গ্রামে গ্রামে, যা এখন নানী-দাদীদের মুখে গল্প শোনার মত। খেজুর গাছের বিলুপ্তির সাথে সাথে বিলুপ্ত হয়েছে গাছিয়াল (খেজুরের গাছ কাটেন যিনি) জীবিকার প্রয়োজনে গাছিয়াল তার আপন পেশা ছেড়ে অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন। ১৯৯৪ সালে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইট ভাটায় কাঠ পোড়ানো নিষিদ্ধ করে বাঁশের কান্ড ও খেজুরের গাছ পোড়ানোর অনুমতি দেয় হয়। বাঁশের কান্ড সহজে না পাওয়ায় শুরু হয় খেজুরের গাছ নিধন। আর এতেই বিলুপ্ত হতে বসেছে খেজুরের গাছ।
হারাতে বসেছে ঐতিহ্য ভোলার খেজুরের রস
Share This