সাতক্ষীরার দেবহাটায় স্যানেটারী ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করছেন সুইপার ফজলু: চাঁদা না দিলেই মোবাইল কোর্টের হুমকী
সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ সাতক্ষীরার দেবহাটায় আবারো চাঁদাবাজিতে বেপরোয় হয়ে উঠেছে জেলাব্যাপী বহুল আলোচিত স্যানেটারী ইন্সপেক্টর বিকাশ চন্দ্র। অব্যাহত গতিতে তিনি তার সীমাহীন চাঁদাবাজী চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোপূর্বে একাধিকবার তার অপকর্মের চিত্র পত্রিকায় প্রকাশ হলেও স্বভাবের পরিবর্তন করতে পারেননি। সর্বশেষ সখিপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শো’কজ করার পর তিনি মাসোয়ারা আদায়ের ধরণ পরিবর্তন করে চাঁদাবাজী অব্যহত রেখেছেন। বর্তমানে তার চাঁদাবাজীতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানের ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।
চলতি অর্থ বছরে নব্য কৌশলে ব্যবসায়ীদের হাতে আনতে নামমাত্র নোটিশ দিয়ে পাকড়াও করে চলেছেন। তার এনব্য ফাদে আটকে গেছেন উপজেলার বিভিন্ন মৎস্য সেড, কাঁচা বাজার, ফলের দোকান, হোটেল রে¯—রাসহ মাংশ ব্যবসায়ীরা। বিপুল পরিমান এই চাঁদা আদায় করতে পোষ্ট অফিসের মাধ্যমে লাইসেন্স নেয়ার নিদ্দেশনা সম্মেলিত একটি চিঠিকেই পুজি করেছেন। নাম মাত্র এই চিঠি পেয়েই ব্যবসায়ীরা ভীত হয়ে অফিসে এসে যোগাযোগ শুর“ করেছেন। তার এতেই পোয়া বারো। আপাতত ঝামেলা ছাড়াতে একদফা নগত কারবার। তারপর মাসিক চুক্তি। এসব নিয়েই বেশ আরাম আয়াসে দিন কাটছে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর বিকাশ চন্দ্রের। যে সকল ব্যবসায়ীরা তার এ দফা-রফার প্র¯—বে রাজী হচ্ছেন তাদের সাথে আর কোন সমস্যা নেই। যারা মাসোয়ারা দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার হুমকিও দেয়ার অভিযোগ ভূক্তভোগিদের। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এসব হুমকী ধামকির পর দোকানি/ব্যবসায়ীরা মাসিক চুক্তিতে রাজি হলে চুক্তি অনুযায়ী মাসিক টাকা উত্তোলন করেন দেবহাটার সখিপুর হাসপাতালের সুইপার ফজলুল করিম ওরফে ফজলু। তিনিও আদায়কৃত মাসিক উৎকোচ থেকে শতকরা হারে কমিশন পেয়ে থাকেন। গত রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এমনই একটি দৃশ্য ধরা পড়ে উপজেলার কুলিয়া নতুন বাজারস্থ মাংশের দোকানে। সেখানে উপস্থিত পূর্ব থেকে চুক্তি সম্পন্ন মাংশ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোয়ারা আদায়ের পাশাপাশি অন্যান্য ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স ইস্যু বা নবায়নের জন্য নিজেকে বড় স্যারের (স্যানিটারী ইন্সপেক্টর) লোক পরিচয় দিয়ে মাসিক উৎকোচ এবং চাঁদা আদায় করছে সখিপুর হাসপাতালের সুইপার ফজলু। পাশে গিয়ে ঘটনা শুনতেই বেরিয়ে আসে অজানা সব নানাবিধও দূর্ণীতির তথ্য। ব্যবসায়ীরা যখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার ভয় দেখিয়ে স্যানিটারী ইন্সপেক্টর বিকাশ ও ফজলুর বিভিন্ন অপকর্মের কথা বলতে শুর“ করেছে ঠিক তখনই সুযোগ বুঝে কেটে পড়লেন চাঁদাবাজ ফজলু মিয়া। এসময় একাধিক হোটেল মালিক, মাংশ ব্যবসায়ীরা জানান, উক্ত স্যানিটারী ইন্সপেক্টর বিকাশ চন্দ্র দীর্ঘদিন ধরেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দিয়ে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার হুমকি দিয়ে আদায় করে চলেছে মাসোয়ারা। আর স্যানিটারী লাইসেন্স নবায়নসহ এসব অপকর্মে ব্যবহার করছে উক্ত হাসপাতালের সুইপার ফজলুকে। সরকারী নিয়ম মোতাবেক সুইপার ফজলুর হাসপাতাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কথা থাকলেও সে উচ্চাভিলাসী হওয়ায় মাসিক চুক্তিতে স্থানীয় মহিলাদের টাকা দিয়ে হাসপাতালের কাজ করিয়ে নিয়ে নিজে চলে যায় স্যানিটারী ইন্সপেক্টরের চাঁদা আদায় এবং হাসপাতালের ডাক্তার ও রোগীদের বিভিন্ন ফাঁক ফোকর খুজে অবৈধ অর্থ আদায়ে।
এব্যাপারে হাসপাতালের প্রধান কর্মকর্তা ডাঃ আকছেদুর রহমান প্রথমে হাসপাতালের কর্মচারীদের হাজিরা খাতা পর্যবেক্ষন শেষে জানান, “সকালে ফজলু একবার হাসপাতালে এসেছিলো, হয়তো আশেপাশে কোথাও আছে”। পরবর্তীতে কুলিয়ায় ফজলুর চাঁদা আদায়ের কথা তাকে জানানো হলে তিনি বলেন, “তাহলে হয়তো এস.আই (স্যানিটারী ইন্সপেক্টর) সাহেবের কাজে বাইরে আছেন। বর্তমানে দেবহাটা সেনিট্যারি ইন্সপেক্টর ও সুইপারের দূর্ণীতিকে ঘিরে জেলা ব্যপি আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
কাজী নাসির উদ্দীন/সাতক্ষীরা/জি নিউজ