সাতক্ষীরা প্রতিনিধি,জি নিউজঃ- সাতক্ষীরার যৌথবাহিনীর অভিযানে পাঁচ ব্যক্তি নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার দিবাগত রাত ও আজ সোমবার ভোরে এ অভিযান চালানো হয়। সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার (এসপি) চৌধুরী মনজুরুল কবীর জানান, সোমবার ভোররাতে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় যৌথবাহিনীর সদস্যরা অবরোধের নামে গাছ কাটা ও নাশকতার মামলার আসামিদের গ্রেফতারে অভিযানে নামে। এসপি কবীর জানান, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সাতানী গ্রামে যৌথবাহিনীর সদস্যরা গেলে চারিদিক থেকে তাদেরকে অবরোধ করে ফেলে স্থানীয় জামায়াত-শিবির সমর্থকরা। এ সময় আত্মরক্ষার্থে যৌথবাহিনীর সদস্যরা গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই জাহাঙ্গীর আলম (২৯) নামে একজন নিহত হয়। পরে অবরোধকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে যৌথবাহিনীর সদস্যরা সেখানে থেকে চলে আসে। এদিকে সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক আজিজুল ইসলাম দাবি করেন, দলের একজন কর্মী নিহত হওয়ার খবর তাঁর জানা আছে। অন্য কেউ নিহত হয়েছেন কি না, তা পরে জানাবেন। এসপি কবীর আরও জানান ভোর ৫টার দিকে দেবহাটা উপজেলার শাখড়া ও সখিপুর এলাকায় যৌথবাহিনীর সদস্যরা আসামি ধরতে অভিযানে গেলে জামায়াত-শিবির সমর্থকরা তাদেরকে ঘিরে ফেলে এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায় তারা যৌথবাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি করলে যৌথ বাহিনীও পাল্টা গুলি চালায় । এতে ঘটনাস্থলেই ৪জন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে। তবে পুলিশ সুপার দেবহাটায় নিহত চারজনের পরিচয় জানাতে পারেননি। এবিষয়ে দেবহাটায় যৌথবাহিনীর অভিযানে নেতৃত্বদানকারী সাতক্ষীরা-৩৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমাম আহসান জানান, জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে তাদের গুলিবিনিময়ের ঘটনায় দেবহাটার শাখড়া ও সখিপুর এলাকায় কয়েকজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনি পড়ে থাকতে দেখেছেন। তবে কতোজন মারা গেছে তা তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি। উল্লেখ- ১২ ডিসেম্বর রাতে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের পর থেকে জেলায় শুরু হয় জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী-সমর্থক এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ও বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। চার দিনে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩০টিসহ ৬০টি বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে গত শনিবার রাতে পুলিশ-র্যাব-বিজিবি যৌথ অভিযান চালিয়ে নাশকতার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় কলারোয়া উপজেলা সদরের ঢাকাগামী বাস কাউন্টার থেকে জামায়াত-শিবিরের ১৬ জনকে আটক করে। গতকাল রাতেও যৌথবাহিনী অভিযান পরিচালনা করে। এছাড়া ১৮ দলের গত ২৬ নভেম্বর থেকে তিন দফায় ডাকা অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে সাতক্ষীরা কার্যত এক ‘আতঙ্কের জনপদে’ পরিণত হয়। ওই সময় থেকে গতকাল রোববার পর্যন্ত এখানে আওয়ামী লীগ নেতাসহ ১২ জন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ৯ জন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং বাকি ৩জন জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। পুলিশ জানিয়েছে এসব হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৮০ জনকে আসামি করে তিনটি মামলা হয়েছে । তাঃ- ১৬ ডিসেম্বর ২০১৩
সাতক্ষীরার জেলায় যৌথবাহিনীর অভিযানে ৫জন নিহত
Share This