ষাটের পরও যৌনতা দেয় স্বাস্থ্যকর ফল

painting1-24 nnজি নিউজ বিডি ডট নেট ডেস্ক :- বয়েসের সঙ্গে সবকিছুই বদলায়। এ পরিবর্তন প্রকৃতির নিয়ম যা অনিবার্য। কিন্তু মানুষের জীবনে সেক্স বা যৌনতাই একমাত্র জৈবিক চাহিদা যা বয়েসের সঙ্গে দৌড়ে পিছিয়ে পড়তে পারে, কিন্তু তা কখনো ক্ষতিকর হয়ে ওঠে না। বরং যেকোনো বয়েসের জন্য যৌনতা প্রয়োজনীয় ও স্বাস্থ্যকর বিষয়।জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-এ মানব জীবনে যৌনতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে নানা তথ্য উপস্থাপন করেছেন বিজ্ঞানীরা। আমেরিকার বায়োআইডেন্টিক্যাল হরমোন থেরাপি গবেষকদের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান ‘বডিলজিকএমডি’-এর চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডা. জেনিফার ল্যান্ডা এ গবেষণার উদ্বোক্তা। ‘ট্র্যাডিশনাল ওবি-জিন’ হিসেবে ১০ বছর কাজ করার পর এ বিজ্ঞানী রিজেনারেটিভ মেডিসিনের বোর্ড সার্টিফিকেটধারী হয়েছেন। মানব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং অন্যতম মৌলিক জৈবিক চাহিদা যৌনতা নিয়ে আপনাদের সব ভ্রান্তি দূর করতে তার এ গবেষণা রিপোর্ট গুরুত্বের সঙ্গে উঠে এসেছে আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে। সূত্র : ফক্স নিউজ, যৌনতা শুধু সম্পর্ক স্থাপন বা বংশবৃদ্ধির জন্যেই নয়, প্রতিটি মানুষের জীবনের অতিপ্রয়োজনীয় কাজ। বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন, চল্লিশ, পঞ্চাশ এমনকি ষাটের পরও সেক্স অনেক স্বাস্থ্যকর, উত্তেজনাপূর্ণ ও তৃপ্তিদায়ক হতে পারে।প্রথমে ওই রিপোর্ট যৌনতা সংক্রান্ত আগের নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার ইতিহাস টেনেছে। যদিও এর আগে বেশ কয়েক ধরনের পরিস্থিতির বিবেচনায় চিকিৎসা বিজ্ঞান বলেছে যে, পঞ্চাশ বা ষাটের পর সেক্স ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এ সময় হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের সম্ভাবনা থাকতে পারে। গুটিকয়েক গবেষণা বলেছে, যৌনতা বেশি বয়েসীদের রক্তচাপ কমিয়ে দিতে পারে। অন্য একটি গবেষণা বলে, যে সকল দম্পতি নিয়মিত সেক্স করেন অথবা একা একা এ কাজটি করেন তাদের ডায়াস্টোলিক প্রেসার কম থাকে। ডায়াস্টোলিক প্রেসার হলো আরামদায়ক ও রক্তে পরিপূর্ণ অবস্থায় হৃদযন্ত্রের আর্টিলারি ওয়ালের বিপরীতে রক্ত চাপের দ্বিতীয় বা নীচের পরিমাপটি।   ব্রিটেনে করা আরেকটি দীর্ঘ সময়ের পরীক্ষা বলে, যারা সপ্তাহে দুই বা তিনবার যৌন সঙ্গমে মিলিত হন, তাদের বিশেষ করে বয়স্কদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে আসে। আর যারা মাসে একবার সেক্স করেন তাদের ঝুঁকির মাত্রা কিছুটা বেশিই দেখা গেছে. আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের এই গবেষণা আরো সূক্ষ্ম বিষয়ে ঢুঁ মেরেছে। নিয়মিত সঙ্গম ওজন নিয়ন্ত্রণ ও কোলেস্টরেলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। আধা ঘণ্টার যৌন মিলন প্রায় ৮৫ ক্যালরি শক্তিক্ষয় করে। আর এতে কোলেস্টরেলের এইচডিএল লেভেল বাড়িয়ে দেয় ১০ শতাংশ যা আদর্শ পরিমাণ কোলেস্টরেল বলে ধরা হয়।পুরুষদের জন্য নিয়মিত সেক্স প্রোস্টেট ক্যান্সারের সম্ভাবনা ব্যাপক হারে কমিয়ে দেয়। প্রতিমাসে ২১ বার এবং প্রতিমাসে ৪ থেকে ৭ বার সঙ্গম করেন এমন পুরুষদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, একুশবারের দলে যারা আছেন, তাদের প্রোস্টেট বেশি পরিষ্কার থাকে। ফলে এতে ক্যান্সার সৃষ্টির জীবাণু জন্মাতে পারে না। তা ছাড়া প্রদাহের জন্য দায়ী কোনো সংক্রমণ ছড়িয়ে পরা ও নোংরা পদার্থ জমার সুযোগও কমে যায়। নিয়মিত যৌনমিলন কেনো দেহের জন্য উপকারী তার বিস্তারিত জানতে বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।আর সাধারণ উপকারীতার কথা বলতে গেলে, স্বাভাবিক নিয়মিত সেক্স দীর্ঘ মেয়াদি স্বাস্থ্যকর জীবন দেয়। এতে ঘুম ভালো হয়, ক্লান্তিজনিত বিষন্নতা কয়ে যায়, ইমিউন সিস্টেম ক্ষমতাশালী হয় এবং জীবনীশক্তি তীব্রতর হতে থাকে।এমনকি ব্যাথার জন্যেও যৌনতা সুফল বয়ে আনতে পারে। পুরুষের বীর্যপাতের সময় হরমোনের নিঃসরণ ব্যাথার উৎসস্থলকে দমিয়ে দেয়। নারীদের যোনিপথের পেশীর উদ্দীপনা পিঠের নীচের দিকের এবং পায়ের ক্রনিক ব্যাথা কমিয়ে দেয়। বহু নারী দেখেছেন যে, যোনিপথের যৌন উদ্দীপনা ঋতুকালীন ব্যাথা, আরথ্রাইটিস এবং মাথা ব্যাথার জন্যেও উপকারীতা বয়ে এনেছে।যৌবন ও তারুণ্যের পরে বৃদ্ধ বয়েসেও যৌনতা অনেক বেশি ভালো ফল বয়ে আনে। বয়েসের সাথে অনেকের যেমন সঙ্গমের ইচ্ছা বা ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে, তেমনি বিপরীতটিও ঘটেছে এমন বয়স্কদের দলটিও যথেষ্ট ভারী। তবে দুই দলের কাছেই দীর্ঘ সম্পর্কের ক্ষেত্রো ষাটে কোঠাতেও যৌনতা যথেষ্ট উত্তেজনাকর যা শুধু পরিতৃপ্তিই দেয়। অবশ্য বুড়ো-বুড়ির মধ্যে এ কাজটি অনেকের কাছে হাস্যকর বা অস্বস্তিকর ব্যাপার বলেই মনে হয়। তবে এ ধরনের চিন্তা বাদ দেয়াই ভালো।কাজেই বয়েসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জীবনে যে পরিবর্তনই আসুক না কেনো, আপনার যৌন জীবনের যে ইতি ঘটেছে তা ভাবা মোটেও ঠিক নয়। কামোত্তেজনা সব বয়েসেই স্বাস্থ্যকর এবং উপকারী। তাই সব পেরেশানি বাদ দিয়ে সঠিক মাত্রার পুষ্টিকর খাবার খান, ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন এবং বয়েসের জন্য দৈহিক পরিবর্তনকে মেনে নিয়ে সুষ্ঠু, সুস্থ ও স্বাভাবিক উপায়ে যৌনসুখ উপভোগ করুন। সূত্র-ইন্টারনেট

Exit mobile version