রাজনীতি আর তরুণদের আকৃষ্ট করে না

জি নিউজ বিডি ডট নেট ডেস্ক ddddd  2:-জার্মানিতে রাজনীতিবিদরা বৃদ্ধ হচ্ছেন৷ অনেক শহরে গ্রামেগঞ্জে তরুণ রাজনীতিকের অভাব প্রকট হচ্ছে৷ আর সেই সাথে গণতন্ত্রও ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে৷ ইদানীং তরুণদের রাজনীতিতে আকৃষ্ট করা ব্যাপারে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে৷ বসার ঘরে একটা দোলনা চেয়ার রাখা আছে৷ কিন্তু এটি ব্যবহারের সুযোগ হয় রোলান্ড কোহলারের খুব কমই৷ তাঁর বয়স ৭০ পার হয়েছে৷ অবসর নেওয়ার পর স্ত্রীর সঙ্গে জমজমাট ভ্রমণে যাওয়ার ইচ্ছাতেও আপাতত ইতি টানতে হয়েছে রাজনীতিবিদ কোহলারের৷ রাইনল্যান্ড ফাল্সের উত্তরে একটি পৌর কাউন্সিলে সবুজ দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি৷ তাঁর জায়গায় উত্তরসূরি খোঁজার চেষ্টা করেও সফল হননি৷রাজনীতিতে অল্পবয়সিদের সংখ্যা নগন্যঅন্যান্য রাজনীতিবিদদের অবস্থাও একই রকম৷ বার্লিনের ফ্রি ইউনিভার্সিটির এক সমীক্ষায় জানা গেছে, জার্মানির রাজনীতিকদের গড় বয়স ৫৮৷ রাজনীতিতে ১৬ থেকে ৩৫ বছর বয়সিদের হার তিন থেকে ১১ শতাংশ৷ রোলান্ড কোহলার-রোলান্ড কোহলার বলেন, এইভাবে বেশিদিন চলতে পারে না৷ যদিও জটিল কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার প্রয়োজন৷ অন্যদিকে সমস্যার সমাধানে উদ্দীপনা ও সজীব চিন্তাধারারও দরকার৷ প্রবীণ ও তরুণের মিশ্রণে এক্ষেত্রে একটা ভারসাম্য থাকতে হবে৷তরুণদের মনে অনীহা জাগায়রাজনীতিতে রুটিন প্রক্রিয়াটা যে ভাবে চলে, তা তরুণদের মনে অনীহা জাগিয়ে তোলে৷ অনেক ব্যাপারেই ওপর থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে যায়৷ সদস্যদের শুধু সায় দিতে হয়৷ এসব দেখেশুনে তরুণরা রাজনীতির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন৷ বাডহনেফ শহরের সিটি কাউন্সিলের সদস্য কারিন হর্নের বয়স ৭২৷ তিনি মনে করেন শিক্ষা ও পেশাগত চাপটা বেশি হওয়ার ফলে তরুণরা রাজনীতিতে আসতে চান না৷ কারিন হর্নের বয়স ৭২-এছাড়া আজকের তরুণ সম্প্রদায় পরিবারের প্রতি মনোযোগ দিচ্ছেন বেশি৷ এ জন্য তাঁরা অন্যান্য বিষয়ে সময় দিতে পারেন না৷ রাষ্ট্র বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেছেন, ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সিরা কোনো রাজনৈতিক আদর্শের নির্দিষ্ট ঘেরাটোপে আবদ্ধ থাকতে চান না৷ রাজনীতিতে আগ্রহ থাকলেও দীর্ঘসূত্রী আলোচনা তাঁদের পছন্দ নয়৷ কোনো সমস্যা হলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে চান তাঁরা৷ পরিবর্তিত পরিস্থিতি দায়ীকারিন হর্নের দলীয় সহযোগী ইয়র্গ হাসেলিয়ার বয়স ৪৫ বছর হলেও ‘যুব রাজনীতিবিদ’-দের মধ্যে পড়েন তিনি৷ তাঁর মতে, এই জন্য পরিবর্তিত পরিস্থিতি দায়ী৷ আগে কোনো রাজনৈতিক দপ্তর হাতে পাওয়াটাই একটা সম্মানের ব্যাপার ছিল৷ এখন অবস্থা বদলেছে৷  ইয়র্গ হাসেলিয়ার ‘যুব রাজনীতিবিদ’!- আজকের তরুণরা নিজেরা সক্রিয় হতে ও গুরুত্ব পেতে চান৷ কারিন হর্ন বলেন, ‘‘বয়স্করা বিদায় নিতে চান না৷ নিজেকে যতদিন সম্ভব কাজে লাগাতে চান৷ তাই তরুণরাও সামনে আসতে পারেন না৷” বেশ কিছু সমীক্ষার ফলাফল থেকে জানা গেছে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আগ্রহ মূলত স্কুল থেকেই শুরু হয়৷ এমনকি পরিবার, বন্ধুবান্ধব, ইন্টারনেট, পত্রপত্রিকার আগেও এর স্থান৷ ‘‘দুঃখের বিষয় স্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়গুলিকে উপেক্ষা করা হয়৷” অভিযোগ করে বলেন মাথিয়াস রুশকে৷ তিনি এসপিডি ঘেঁষা ফাউন্ডেশন ফ্রিডরিশ এবার্ট ফাউন্ডেশনে একটি প্রকল্প গড়ে তুলেছেন৷ এতে ছাত্ররা সত্যিকারের সিটি কাউন্সিলের সভায় অংশ নিতে পারে৷ রাজনীতিবিদ ও প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞরা ছাত্রদের প্রশ্নের উত্তর দেন৷ তাদের কোনো প্রস্তাব থাকলে, সে ব্যাপারে মতামত দেন৷ ছাত্রদের এখানে ছোট করে দেখা হয় না৷ বরং তাদের একই রকম ‘আসন’ দেওয়া হয়৷ ওবারহাউসেনের ‘যুব পার্লামেন্ট’এর ফলে অল্পবয়সিদের মধ্যে রাজনীতি সম্পর্কে অনেক নেতিবাচক ধারণা দূর হয় ও পরবর্তীতে তারাও রাজনীতিতে ক্ষেত্রে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেন৷ওবারহাউসেন আরো এক ধাপ এগিয়ে গেছেএক্ষেত্রে ওবারহাউসেন শহর আরো এক ধাপ এগিয়ে গেছে৷ অন্য ৮০টি পৌরসভার মত এই শহরেও তরুণদের নিয়ে একটি ‘যুব পার্লামেন্ট’ গড়ে তোলা হয়েছে৷ এই পার্লামেন্টের নিজস্ব বাজেট রয়েছে৷ ১৩ থেকে ২০ বছর বয়সিরা তাদের জন্য যে সব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, নিয়মিত সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷ ‘‘আমরা এখানে সম্পৃক্ত হয়েছি, কেননা শহরটির খরচ বাঁচানোর জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ আমাদের বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ করেছে৷” এই মন্তব্য ‘যুব পার্লামেন্টের’ কিছু সদস্যের৷ তাদের সক্রিয় প্রচেষ্টায় শহরের যুব ভবনটি রক্ষা করা গিয়েছে৷ দেওয়া হয়েছে নতুন রূপ৷ ছাত্রছাত্রীদের জন্য বেশ কিছু বাসরুটের উন্নয়ন করাও সম্ভব হয়েছে৷ সূত্র:-DW DE,তারিখ:- ০২-০২-২০১৪।

 

Exit mobile version