জি নিউজ বিডি ডট নেট ডেস্ক:- আর্থিক বিষয়ে প্রায় সবারই অসন্তোষ থাকে। এ অসন্তোষের কারণ হতে পারে বিভিন্ন বাজে অভ্যাস, যা সহজে বদলানো যায় না। এসব অসন্তোষ নিয়ে মনোবিজ্ঞানীরাও গবেষণা করেছেন। এসবের ভিত্তিতে আর্থিক বিষয়ে ১২টি বদঅভ্যাস ও তার প্রতিকার নিয়ে এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে বিজনেস ইনসাইডার। আপনি যদি আপনার আর্থিক অবস্থা নিয়ে অসন্তোষে ভোগেন তাহলে দ্রুত দেখে নিন এ ১২টি পয়েন্ট। ১/প্রত্যেকদিনদুপুরেরব্যয়বহুলখাবারকিনেখাওয়া -আপনি যদি কোনো ব্যয়বহুল শহরে বাস করেন তাহলে প্রত্যেকদিন দুপুরে খাবার কিনার জন্য বিপুল অর্থ ব্যয় করা খুবই সহজ। তবে এজন্য আপনি যদি অপব্যয় শুরু করেন তাহলে তা সত্যিই উদ্বেগের বিষয়। এ অর্থ কিছুটা সাশ্রয় করে আপনি সহজেই বিদেশের কোনো স্থানে ঘুরে আসতে পারেন কিংবা টাকা জমিয়ে খাবার রাখার জন্য একটা ভালো ফ্রিজ কিনতে পারেন। এ সমস্যা হঠাৎ করে সমাধান করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন পরিকল্পনা। খাবারের বিকল্প কোনো উপায় বের করা সম্ভব। যেমন দৈনিক খাবারের বাজেট থেকে ১০ টাকা খরচ কমিয়ে ফেলুন। এর পরের মাসে কমান আরো ১০ টাকা। এভাবে বছর শেষে বেশ বড় অংকের অর্থ আপনি বাঁচাতে পারবেন।২/বিলেরক্ষেত্রেসবচেয়েসাশ্রয়ীরেটকেহেলাফেলা–বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী রেট নির্ণয় করা খুবই জরুরি। মোবাইল ও টেলিফোন বিলের ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম রেটের ফোন নেওয়া যেমন জরুরি তেমন ডিশের লাইন ও ইন্টারনেটের ক্ষেত্রেও এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। আপনার জীবনযাত্রার মানকে নিচে না নামিয়ে অর্থ বাঁচানোর এটি হতে পারে একটি অন্যতম উপায়। এজন্য আপনার কোনো মোবাইল ফোনের সংযোগ নেওয়ার আগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রেটগুলোর বিষয়ে খবর নিতে হবে। অনলাইনের সাহায্য এক্ষেত্রে অবশ্যই কাজে আসবে।৩/ঋণেরক্ষেত্রেসুদেরহারবিবেচনাকরা–ঋণ নেয়াটা কোনো কাজের কথা নয়। আর সবধরনের ঋণ সমান নয়। কোনো ঋণের সুদ অনেক বেশি আবার কোনোটার তুলনামূলক কম। ঋণ যদি নিতেই হয় তাহলে কম সুদের ঋণ নেয়াটাই ভালো। আর আপনার যদি কয়েক ধরনের ঋণ থাকে তাহলে সবচেয়ে ভালো হল বেশি সুদের ঋণটা আগে পরিশোধ করে দেয়া।৪/প্রতিষ্ঠানেরআর্থিকসুবিধানিতেহেলাফেলাকরা-বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্মীদের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দেয়। এগুলোর বিষয়ে সবসময় খেয়াল রাখতে হয়। এসব বিষয়ে হেলাফেলা করলে আর্থিক দিক দিয়ে আপনার কোনো লাভ হবে না। ৫/ক্রেডিটকার্ডেলোনরাখা-আপনি যদি ক্রেডিট কার্ড বহন করেন তাহলে তা শুধু জরুরি প্রয়োজনেই ব্যবহার করবেন। অন্য সময় তার মাইনাস ব্যালেন্স বহন করা মানে তার জন্য আপনার বাড়তি অর্থ ব্যয় করা। এজন্য ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সাবধানতা প্রয়োজন।৬/ছুটিকাটানোরজন্যঅতিরিক্তব্যয়-আপনি দেশে কিংবা বিদেশে যেখানেই ছুটি কাটাতে যান না কেন সেখানে নানাভাবে ব্যয় সংকোচন করা যায়। যেমন বহু স্থানে পিক সিজনে না গিয়ে সিজনের আগে বা পরে সুবিধাজনক সময়ে ঘুরে আসা যায়। এতে হোটেলসহ নানা ক্ষেত্রে ছাড় পাওয়া যায়। এছাড়া ব্যয়বহুল কোনো স্থানে না গিয়ে একই ধরনের স্থানে ছুটি কাটানোর মাধ্যমে ব্যয় সংকোচন করা সম্ভব।৭/সবশেষেসঞ্চয়েরচিন্তা- আমাদের অনেকেরই অভ্যাস বাইরের বিভিন্ন খরচ, পাওনা ও বিল পরিশোধ করে তারপর সঞ্চয়ের কথা চিন্তা করেন। কিন্তু আমরা ভুলে যাই যে, সঞ্চয়ের চিন্তা আগেই করা উচিত, এবং সে অনুযায়ী খরচ করা উচিত। এজন্য প্রয়োজন শুধু আপনার সঞ্চয়ের চিন্তা ও পরিকল্পনা।৮/বিনোদনেঅতিরিক্তখরচ- ব্যয়বহুল সিডি-ডিভিডি কেনা কিংবা অর্থ খরচ করে বিনোদন সামগ্রী কেনাকাটা করা অভ্যাস আমাদের অনেকেরই আছে। এর অনেকগুলো আবার কেনার পরে কোনো কাজেও লাগে না। আর অনলাইনে ইউটিউবের মতো সাইটে যদি এগুলোর বিকল্প পাওয়া যায় তাহলে এর পেছনে খরচ না করে সে অর্থ অন্য কাজে ব্যয় করতে পারেন। ছোট ছোট এধরনের খরচগুলো একত্র করলে অনেক বড় খরচ হয়ে দাঁড়ায়।৯/সঞ্চয়েরলক্ষ্যনির্ধারণকরেতাভুলেযাওয়া- অনেকেই চিন্তা করেন প্রতি মাসে এতো টাকা সঞ্চয় করবেন। কিন্তু পরে তা সম্পূর্ণ ভুলে যান। আপনার বাজেটে তেমন কোনো পরিবর্তন না করেই সঞ্চয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন বিষয়টিকে সম্পূর্ণভাবে মনে রাখা।১০/বাজেটবিধ্বংসীখাওয়া–দাওয়া-অনেকদিন পর কোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হচ্ছে, তাকে নিয়ে বাইরে কোথাও ব্যয়বহুল খাওয়া-দাওয়া করে পকেট খালি করে ফেলার অভ্যাস আমাদের অনেকেরই আছে। এর বদলে বাড়িতে কিংবা কোনো সাশ্রয়ী স্থানে তার সঙ্গে চমৎকার সময় উপভোগ করা সম্ভব। এতে আপনার বাজেটে পরিবর্তন হলেও তার সঙ্গে সম্পর্কে কোনো পরিবর্তন হবে না।১১/শেষমিনিটেছুটিরখরচ -কোথাও বেড়াতে যাওয়ার জন্য অনেক আগে থেকে পরিকল্পনা করলে বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যায়। হোটেল, বিমান টিকিট ইত্যাদিতে আগে থেকে বুকিং করলে অনেক ছাড় পাওয়া যায়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বুকিং দিলে এসবের জন্য বাড়তি বহু অর্থ খরচ করতে হয়। বিষয়টা মাথায় রেখে সময়মতো ছুটির পরিকল্পনা করলে আপনার বাজেটের দিক দিয়ে তা ব্যাপক সুবিধা আনবে।১২/আর্থিকউপহার- আপনাকে কি কেউ প্রাইজ বন্ড, গিফট কার্ড ইত্যাদি উপহার দিয়েছে? যদি দিয়ে থাকে তাহলে এগুলো ভাঙাতে ভুলবেন না। অনেকেই পাওয়া এসব উপহার কীভাবে ভাঙাতে হবে সে চিন্তায় এদিকে আর অগ্রসর হন না। পরে এগুলো হারিয়ে ফেলেন কিংবা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়। বাংলাদেশে এভাবে কতো অর্থ অপচয় হয় সে তথ্য পাওয়া না গেলেও জানা যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের গিফট কার্ড অব্যবহৃত থাকে। সূত্র-ওয়েবসাইট তাঃ-০৭ ফেব্রুয়ারি২০১৪।