বিএনপি ক্ষমতায় গেল কি না তা বড় কথা নয় -খালেদা জিয়া

জি নিউজ ঃ চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, সরকারের দুর্নীতি, জুলুম-অত্যাচার নির্যাতনের জবাব জনগণ সিটি নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে দিয়েছে। আগামীতেও জনগণ একইভাবে সরকারকে প্রত্যাখান করবে। গতবুধবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি  এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে সিটি নির্বাচনগুলোতে দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়নের দাবি জানিয়ে বিএনপি, গাজীপুর নির্বাচনে তাদের নিরপেক্ষতার প্রমাণ দেয়ার সুযোগ রয়েছে। তাই আমি আশা করব গাজীপুর সিটি নির্বাচনে অবিলম্বে সেনা বাহিনী মোতায়ন করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। বর্তমান সরকারের অধীনে সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে ক্ষমতাসীনদের এমন বক্তব্যে নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। সুষ্ঠু হলে সরকার সর্মথিত প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হত। তাই তাল-বাহানা বাদ দিয়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চিন্তা-ভাবনা শুরু করুন। লেভেল প্লেয়িং  ফিল্ড তৈরি করুন। সমানে সমানে খেলা হলে দেখা যাবে জনগণ কাদের ভোট দেয়। শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানের শুরুতেই সিলেটের নবনির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর খালেদা জিয়ার হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ  হোসেন, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি এম এ হক বক্তব্য রাখেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপি, চেয়ারপারসনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী, নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহমিনা রুশদী লুনা ও বিএনপি নেতা আবদুল মুক্তাদির। গত ১৫ জুন অনুষ্ঠিত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৮ দলীয় জোট সর্মথিত মেয়র প্রার্থী হিসেবে আরিফুল হক চৌধুরী বিশাল ভোটের ব্যবধানে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোট প্রার্থী বদরউদ্দিন কামরানকে পরাজিত করেন। বক্তব্যের শুরুতেই সিলেট সিটি করপোরেশনের নব নির্বাচিত  মেয়র ও কাউন্সিলদের ব্যক্তিগত ও দলের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানান খালেদা জিয়া। তিনি নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।   চার সিটিতে বিজয়ের ব্যাপারে খালেদা জিয়া বলেন, এখন আনন্দ-উপভোগের সময় নয়। জালিমের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করে বিজয় সুনিশ্চিত করাই হবে বড় আনন্দ। খালেদা জিয়া বলেন, নির্বাচনের পূর্বে দলের ভেতরে ছোটোখাটো বিবেদ থাকা সত্ত্বেও আমার নির্দেশ মতো দলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছে বলেই আজকের এ বিজয়। ভবিষ্যতেও ঐক্যবদ্ধ থেকে দল ও জোটের নেতাকর্মীদের কাজ করার আহবান জানান তিনি। তিনি বলেন, সিলেটের পূণ্যভূমি থেকে আমাদের জয় শুরু হয়েছে। আশাকরি ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে। শুধু সিলেট নয়, সবগুলো সিটি করপোরেশন নির্বাচনেই সকলেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেছেন। যার জন্য এত বড় জয় আমাদের এসেছে।  দেশের বর্তমান দূরাবস্থার কথা তুলে ধরে খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেল কি না তা বড় কথা নয়, বড় কথা হলো দেশ রক্ষা করা। এই অবস্থা থেকে দেশকে  মুক্ত করতে হবে। জনগণ আওয়ামী লীগের দুর্নীতি, অত্যাচার থেকে মুক্তি চায়। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, দেশের ৯০ ভাগ মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়।  এখনো সময় আছে দ্রুত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান পুনর্বহালের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে বিল পাস করুন। বিলটি পাস করলে আমাদের আর কোনো দাবি থাকবে না। আপনাদের মেয়াদের বাকি সময়ে আমাদের কোনো আন্দোলনের কর্মসূচি থাকবে না। এম ইলিয়াস আলীর গুমের কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, ইলিয়াস আলীকে অবিলম্বে ফিরিয়ে দিতে হবে। না দিলে এর পরিণাম ভালো হবে না।  খালেদা জিয়া বলেন, ক্ষমতার মালিক আল্লাহ। তিনি মানুষকে ক্ষমতা দেন আবার কেড়েও নেন। তাই  ক্ষমতার বড়াই করে দেখাবেন না।

Exit mobile version