জি নিউজ ঃ রংপুরের পুত্রবধূ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আজ বুধবার রংপুরের পীরগঞ্জ সফরকে ঘিরে পাইপ লাইনে গ্যাস সংযোগ ঘোষণার অপেক্ষায় রংপুরবাসী ও প্রত্যাশার অাঁচল পেতেছে পীরগঞ্জবাসী। রংপুরবাসীদের মতে, গত ৯১, ৯৬ ও ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুরের ৬টি আসনে একটিতেও জয়লাভ করতে পারেনি আওয়ামী লীগ। ২০০৮ সালে নির্বাচনে রংপুরের ৬টি আসনের মধ্যে ৩টিতে শেখ হাসিনাসহজয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর সফরে এসে স্থানীয় জিলা স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় রংপুরের পুত্রবধূ হিসেবে অবহেলিত রংপুরের দায়িত্ব তুলে নেন তিনি। রংপুরের ব্যবসায়ীদের মতে,গ্যাস ছাড়া অবহেলিত রংপুরের শিল্পকারখানা ত্বরান্বিত করা সম্ভব নয়। এঅঞ্চলে ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার পাশাপাশি বেকার সমস্যা দূরীকরণ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষে পাইপ লাইনে গ্যাস সংযোগের বিকল্প নেই। তাই গ্যাসের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে রংপুরবাসী। রংপুর সিটি মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার মোজাম্মেল হোসেন, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. রেজাউল ইসলাম রাজু, রংপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ আলী, বাকবিশিস রংপুর জেলা শাখার সম্পাদক রওসানুল কাওছার সংগ্রাম, সমাজ পরিবর্তন ও উন্নয়ন ফোরামের রংপুর বিভাগের সভাপতি এসএম পিয়াল, সহসভাপতি পরিমল চন্দ্র, সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম বাবলু, সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান নাসিমা জামান ববি, মহানগর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মিলন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, শ্রমিক রংপুরে পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস সংযোগের জোর দাবি জানান। রংপুরে গ্যাস সংযোগের দাবি জানিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য ও রংপুর জেলা, মহানগর জাপার সভাপতি আলহাজ্ব মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস চেয়েও পাইনি। তাই এবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোন দাবি নয়, দাবি জানাচ্ছি আমাদের রংপুরের ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছে। সংশ্লিষ্ঠ সুত্র মতে, মহাজোট সরকার ২০১০ সালের ২৫ জানুয়ারী রংপুরকে বিভাগ হিসেবে অনুমোদন দেয়। বৃহত্তর রংপুর ও দিনাজপুরের আট জেলা নিয়ে গঠিত হয় দেশের সপ্তম বিভাগ ‘রংপুর’। এর আড়াই বছর পর ২০১২ সালের ১ জুলাই দেশের নবম সিটি কপর্োরেশন হিসেবে যাত্রা শুরু করে ‘রংপুর সিটি কপর্োরেশন’। ওই বছরই ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রথম নগরপিতা হিসেবে নির্বাচিত হন সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু। সেসময় নির্বাচনের আগে ঝন্টু ঘোষণা দিয়েছিলেন নির্বাচনে জয়ী হলে তার প্রথম কাজ হবে গ্যাসের জন্য আন্দোলন। তাই প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরকে ঘিরে আশাবাদি হয়ে উঠেছে রংপুরবাসী। প্রায় পৌনে ২ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত রংপুর বিভাগে ছোট-বড়-মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে অনেক। এ অঞ্চলের ভারী শিল্পের বিকাশ ঘটাতে গ্যাসের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনে দিনে। দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে রংপুরের পীরগঞ্জে এসে শেখ হাসিনা আজ পীরগঞ্জের জনসভায় গ্যাস সংযোগের ঘোষণা দেবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছেন রংপুর অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফরকে ঘিরে তারই শ্বশুর বাড়ির এলাকার লোকদের আশার অন্ত নেই। নানা প্রতিশ্রুতি ছাড়াও অনেক কিছুরই বাস্তবায়ন হবে এমন প্রত্যাশায় অাঁচল পেতে আছেন ওই উপজেলার মানুষ। তাদের প্রত্যাশা- প্রধানমন্ত্রী এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে তার পরিকল্পনার কথা বলবেন। খালাশপীর কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলন, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, উপজেলায় ভেজিটেবল প্রসেসিং জোন স্থাপন করে ইপিজেড বাস্তবায়ন, এই সরকারের আমলেই মেরিন একাডেমির বাস্তবায়ন, পীরগঞ্জের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সরকারিকরণ, একটি স্টেডিয়াম, বড়বিলা বিলকে কেন্দ্র করে শিশু পার্ক বিনোদন কেন্দ্র ও পিকনিক স্পট ঘোষনাসহ তার গ্রামেরবাড়ী ফতেহপুরে ড. ওয়াজেদ মিয়ার সমাধীর উন্নয়ন কর্মের ঘোষনা দেবেন। এছাড়াও এলাকার মানুষের দাবী পীরগঞ্জে ড. ওয়াজেদ মিয়ার নামে একটি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা; রংপুরকে ডিজিটাল বিভাগ, ভেন্ডাবাড়িকে থানা ঘোষনা করা। রংপুর পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
পাইপলাইনে গ্যাস সংযোগের প্রত্যাশায়
Share This