চীনে বিত্তবানদের পছন্দ নারী দেহরক্ষী

China-Women1অনলাইন ডেস্ক  ঃ- চীনের ২২ বছর বয়সী তরুণী ইয়াং ডংলান। একসময় তিনি প্রসাধন সামগ্রী বিক্রি করে জীবন নির্বাহ করতেন। কিন্তু এক বছর আগে পেশা বদলের সিদ্ধান্ত নেন ইয়াং। তবে প্রচলিত কিছু নয়, দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করার পেশা। পছন্দের পেশাটা অবশ্য এখনো শুরু করতে পারেননি তিনি। দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করার জন্য এখন নিজেকে প্রস্তুত করছেন ইয়াং।শুধু ইয়াং নন, তাঁর মতো অনেক চীনা নারীই এখন দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করাকে পেশা হিসেবে নেওয়ার কথা ভাবছেন। অনেকে কাজ করে চলেছেন দক্ষতার সঙ্গে। চীনে বিত্তবান লোকদের মধ্যে নারী দেহরক্ষী রাখার প্রবণতা বাড়ছে। ফলে দেশটিতে ক্রমেই প্রসারিত হচ্ছে নারী দেহরক্ষীর বাজার। নারী দেহরক্ষীরা আকর্ষণীয় বেতন পেয়ে থাকেন। তবে অর্থনৈতিক দিকটাই এটাকে পেশা হিসেবে নেওয়ার একমাত্র কারণ নয় বলে জানালেন ইয়াং।সিএনএনকে ইয়াং বলেন, এ কাজ করলে বসদের সঙ্গে বাইরে যাওয়ার সুযোগ হয়। অনেক কিছু দেখা যায়। এটা নয়নাভিরাম ব্যাপার।নিজেকে দেহরক্ষী হিসেবে প্রস্তুত করার কাজটা সহজ নয়। এর জন্য চাই প্রচুর শারীরিক সক্ষমতা। অস্ত্র চালানো, নিজের বসকে যেকোনো আক্রমণ থেকে রক্ষা করার কৌশল আয়ত্ব করা। বসের সঙ্গে আচরণ কেমন হবে, এসব জানার ব্যাপার তো রয়েছেই। এত কিছু জানার জন্য যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বিকল্প নেই, বলার অপেক্ষা রাখে না। এ জন্য বেইজিংভিত্তিক একটি সিকিউরিটি একাডেমি থেকে একটা কোর্সে অংশ নিয়েছেন ইয়াং। দেহরক্ষীর ক্রমবর্ধমান বাজারের ব্যাপারটা মাথায় রেখে ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। এই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবছর অনেক নারী দেহরক্ষী সরবরাহ করা হয়।প্রতিষ্ঠানের মালিক চেন ইয়ংকিং। তিনি নিজে একসময় দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করেছেন। নিজের প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে চেন বলেন, ‘আমাদের নারী দেহরক্ষীদের আমরা শুধু শারীরিক প্রশিক্ষণই দিই না, কীভাবে মদ্য পান করতে হয় সেটাও শেখাই। এতে বসদের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ সহজ হয়। তা ছাড়া তাঁরা শুধু দেহরক্ষী হিসেবেই কাজ করেন না, অনেক সময় বসের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবেও কাজ করেনা বিশ্বখ্যাত ‘ফোর্বস’ সাময়িকীর হিসাব অনুযায়ী, চীনে এ বছর বিলিওনিয়ারের সংখ্যা ৩১৭ জন। বিলিওনিয়ারের সংখ্যার দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পরই অবস্থান দেশটির।চেন জানান, নারী ও পুরুষ বিলিওনিয়ারের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তাতে পুরুষের চেয়ে নারী দেহরক্ষীরাই সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন। এ কারণে আগ্রহী নারীদের সংখ্যাও বাড়ছে।চেন জানান, নারীদের দেহরক্ষীর পেশার প্রতি আগ্রহের কারণ বেকারত্ব, নিম্ন বেতন, ভিআইপিদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ, দারুণ সব অভিজ্ঞতা অর্জন ইত্যাদি। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, এর মধ্য দিয়ে চীনা নারীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ছে।দেহরক্ষীর হওয়ার প্রশিক্ষণটা খুবই কঠিন। অনেকেই এ প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ শেষ করতে পারেন না। সব বাধা পেরিয়ে সম্প্রতি চেনের একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন জু সি ও ঝ্যাং মিন। তরুণ বয়সে তাঁদের সামরিক বাহিনীর প্রতি আগ্রহ ছিল। দেহরক্ষী হওয়ার প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জু সিএনএনকে বলেন, ‘প্রথম কয়েক দিন আমাদের বুকের ওপর ভর দিয়ে চলা শেখানো হতো। বরফসম ঠান্ডা পানিতে ঝাঁপ দিতে হতো। প্রশিক্ষণের মাঝামাঝি সময়ে ১৮ বছর বয়সী এক ছেলে যখন সরে দাঁড়াল, সত্যি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু অন্য নারী সতীর্থরা আমাকে সাহস জুগিয়েছে।’ চেনের একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করা ডং জানান, দেহরক্ষী পেশা বেছে নেবেন কি না, এ সিদ্ধান্ত তিনি এখনো নেননি। তবে প্রশিক্ষণ থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা বেশ কাজে দেবেন বলে বিশ্বাস করেন তিনি। সূত্র : ইন্টারনেট  তাঃ- ১৮জানুয়ারি ২০১৪

 

Exit mobile version