চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ না হলে দুই নেত্রীর বাসভবনের সামনে অবস্থান

businssnews 16জি নিউজ বিডি ডট নেট ঃ-  চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ এবং রাজনৈতিক সমঝোতা না হলে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার বাসভবনের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা। গতকাল দেশব্যাপী সাদা পতাকা হাতে প্রতিবাদ বন্ধনে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা। এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি ব্যবসায়ী নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টুর মুক্তির দাবি জানানো হয় কর্মসূচি থেকে। শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই ঘোষিত এ কর্মসূচি সারা দেশের সব চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন একযোগে পালন করে। সহিংসতা বন্ধ এবং সমঝোতার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবিতে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের সামনে সাদা পতাকা হাতে অবস্থান করেন তারা। এফবিসিসিআই’র কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা পতাকাবন্ধনের পাশাপাশি রাজধানীর শাপলা চত্বর থেকে দৈনিক বাংলার মোড় পর্যন্ত মিছিল করেন। তৈরী পোশাক শিল্প খাতের ব্যবসায়ীরা কারওয়ানবাজারে অবস্থিত বিজিএমইএ ভবনের সামনে পতাকাবন্ধন কর্মসূচি শেষে মিছিল করে এসে এফবিসিসিআই’র কর্মসূচিতে যোগ দেন। সাদা পতাকা হাতে প্রতিবাদ বন্ধন কর্মসূচি পালনকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেনÑ এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, সাবেক সভাপতি সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক ও এ কে আজাদ, সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন, বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ, শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সালাম মুর্শিদী প্রমুখ। এফবিসিসিআই পরিচালকদের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ ব্যবসায়ীরা কর্মসূচিতে যোগ দেন। কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ বলেন, রাজনীতিবিদরা যেমন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চান, তেমনি আমরাও ব্যবসা পরিচালনার জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ চাই। আমরা ধ্বংসাত্মক রাজনীতি চাই না। এ অবস্থা চলতে থাকলে ব্যবসায়ীরা কর্মচারীদের বেতনও দিতে পারবেন না। গোটা দেশের লাখ লাখ ব্যবসায়ী কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সরকারের কাছে একটি বার্তা পৌঁছে যাবে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা অচিরেই না কাটলে ব্যবসায়ীরা আরো কঠোর কর্মসূচি দেবে বলেও তিনি সতর্ক করে দেন। সালমান এফ রহমান বলেন, আমরা রাজনৈতিক নেতাদের শ্রদ্ধা করি; কিন্তু তারা যেভাবে দেশ চালাচ্ছেন সেটা আমরা সহ্য করতে পারছি না। এ হীন রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। দেশটাকে সোজা পথে আনতে হবে। তারা সমাধান করতে না পারলে আমরা রাজপথে নামবো। আমরা সংগঠিত হচ্ছি। রাজনীতিবিদরা ব্যর্থ হলে নেতৃত্ব আমাদেরই দিতে হবে। দুই নেত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশটাকে সুন্দরভাবে চালাতে না পারলে দায়িত্ব আমাদের ওপর ছেড়ে দিন। আনিসুল হক বলেন, বর্তমানে দেশের ১৬ কোটি মানুষ কারাগারে রয়েছে। এই কারাগার থেকে আমরা মুক্তি চাই। তিনি বলেন, নব্বই সালে যারা স্বৈরাচারের ভূমিকায় ছিল। এখন রাজনৈতিক এসব নেতা গণতন্ত্র রায় তাদের কদমবুচিতে ব্যস্ত। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর আমাদের দেশের ইতিহাস বদল হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, চলমান সহিংসতা অব্যাহত থাকলে আমরা ভেঙে যাওয়া মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারব না। এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, রাতের বেলায় আমরা যখন টকশো দেখি তখন মনে হয়, এটা বাংলাদেশ না কি সোমালিয়া। ইরান নাকি ইরাক। লিবিয়া নাকি আফগানিস্তান। এ দেশের রাজারা রাজনীতি ছেড়ে মারণনীতি গ্রহণ করেছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন। দুই নেত্রীর উদ্দেশে এ কে আজাদ বলেন, আমরা আপনাদের মতার আসনে বসিয়েছি; কিন্তু আপনারা আমাদের কথা ভাবছেন না। সব ধরনের ব্যবসা আজকে হুমকির মুখে পড়েছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে ব্যবসায়ীরা দুই নেত্রীর বাসভনের সামনে অবস্থান নেবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। পোশাক শিল্পের মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে দাবি করে আতিকুল ইসলাম বলেন, এ অসুস্থ রাজনীতির কারণে আমরাও অসুস্থ হয়ে গেছি। এ অসুস্থ রাজনীতি ত্যাগ করুন। খবর নয়া দিগন্ত এর তাঃ- ১৬ ডিসেম্বর ২০১৩

 

Exit mobile version