গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বাঁধা

অপূর্ব লাল সরকার, গৌরনদী (বরিশাল) থেকে :বরিশালের গৌরনদী উপজেলার দক্ষিণ গোবদ্ধর্ণ গ্রামের এক গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি ধামাচাঁপা দেয়ার জন্য স্থানীয় গ্রাম্য মোড়লরা সালিশ বৈঠকের নামে কালক্ষেপণ করে ধর্ষিতা ও তার পরিবারকে মামলা দায়ের করতে বাঁধা দিয়ে উল্টো বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি অব্যাহত রেখেছে।

ধর্ষিতা গৃহবধূ ও তিন সন্তানের জননী (২৭) অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন থেকে একই গ্রামের আবুল হোসেন সরদার তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে তার স্বামীর অনুপস্থিতিতে আবুল হোসেন তার সহযোগী একই গ্রামের আজাহার সরদার ও পার্শ্ববর্তী পশ্চিম শাওড়া গ্রামের ওয়াসিম খান ঘরের বেড়া কেটে ঘরে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে বখাটেরা তাকে মারধর করে জোরপূর্বক ঘুমের ঔষধ খাইয়ে দিয়ে গণধর্ষণ করে।

ধর্ষিতার দিন মজুর স্বামী অভিযোগ করেন, তিনি পার্শ্ববর্তী চাঁদশী গ্রামের একটি মাছের ঘেরে নৈশপ্রহরী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ঘটনার সময় তার অনুপস্থিতির সুযোগে বখাটেরা ঘরে প্রবেশ করে তার স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে। শুক্রবার সকালে তিনি বাড়িতে ফিরে অচেতন ও উলঙ্গ অবস্থায় তার স্ত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করেন। এসময় স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম সরদারসহ এলাকার প্রভাবশালীরা তার স্ত্রীকে হাসপাতালে আনতে বাঁধা দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করতে পরামর্শ দিয়ে বিষয়টি সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে তারা নিষ্পত্তি করার আশ্বাস দেন। রোববার সকালে সালিশ বৈঠকের কথা থাকলেও মোটা অংকের টাকা উৎকোচের বিনিময়ে প্রভাবশালীরা উল্টো নির্যাতিতা গৃহবধূ ও তার স্বামীকে বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে জানা গেছে। এদিকে নির্যাতিতা গৃহবধূর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে গত রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তার বাবার বাড়ির লোকজন তাকে গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন।

নির্যাতিতা গৃহবধূর বাবা অভিযোগ করেন, তার অসুস্থ মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর ওইদিন সন্ধ্যায় প্রভাবশালীরা হাসপাতাল থেকে তার মেয়ের নাম কেটে হাসপাতাল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে।

এব্যাপারে দক্ষিণ গোবর্দ্ধন গ্রামের বাসিন্দা ও ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম সরদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি উৎকোচের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যাদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে তারা বর্তমানে কেউ বাড়ি না থাকায় সালিশ মিমাংসায় বসা সম্ভব হয়নি। গৌরনদী থানার ওসি মো. আবুল কালাম জানান, এব্যাপারে থানায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তারপরেও বিষয়টির খোঁজখবর নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

Exit mobile version