২০১২ সালের এশিয়া কাপ ফাইনালে বাংলাদেশকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় পাকিস্তান।
স্পোর্টস ডেস্ক :- বাংলাদেশে এশিয়া কাপ ক্রিকেটের আসর বসলে তাতে অংশ নেবে না বলে যে ঘোষণা দিয়েছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি), সম্প্রতি কলম্বোয় এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সভায় সে অবস্থান থেকে সরে গিয়েছিল তারা। গত ৪ জানুয়ারি কলম্বোয় অনুষ্ঠিত সভায় বিসিবি’র উপস্থাপিত পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা পরিকল্পনায় সন্তোষ প্রকাশ করে অংশগ্রহণকারী সবগুলো দেশ। বৈঠকে কোনো দলের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি ওঠেনি। বাংলাদেশে এশিয়া কাপ ইস্যুতে কোনো উচ্চবাচ্য পর্যন্ত করেনি পিসিবি। এমনকি ওই সভায় বিকল্প কোনো স্বাগতিকের নামও উত্থাপিত হয়নি। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় এশিয়া কাপে খেলতে আপত্তি তোলেনি তারা। ওই সভায়ই আফগানিস্তানকে নিয়ে ৫ জাতির এশিয়া কাপের টিভি রাইটস স্টার ইন্ডিয়ার কাছে বিক্রির সিদ্ধান্তও চূড়ান্ত করেছে এসিসি। শুধু তাই নয়, ১১ ম্যাচের ফিকশ্চারের খসড়াও প্রস্তুত হয়ে গেছে। এসিসি’র ওই সভায় পিসিবি’র নীরব ভূমিকায় এশিয়া কাপ আয়োজনের সংশয় কেটে গেছে বলে মনে করা হলেও আবারো এশিয়া কাপকে শঙ্কায় ফেলেছে পিসিবি। বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা এবং পাকিস্তানবিরোধী মনোভাব তীব্র আকার ধারণ করার অজুহাত তুলে বাংলাদেশে আসন্ন এশিয়া কাপে অংশগ্রহণ নিয়ে শঙ্কার আলামত দিয়েছে পিসিবি’র এক সূত্র। ভারতের দু’টি ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া এবং মুম্বাই মিররসকে দেয়া সাক্ষাতকারে পিসিবি’র এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘বাংলাদেশে ম্যাচ খেলতে যাওয়ার আগে বর্তমান পরিস্থিতির কতটা উন্নতি হয়, তার ওপর নির্ভর করবে এই আসরে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয়টি।’ বাংলাদেশে পাকিস্তানবিরোধী মনোভাব তীব্র হওয়ায় এবং পাকিস্তানবিরোধী বিক্ষোভের কারণে বাংলাদেশ সফরে পাকিস্তান ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন পিসিবি’র ওই কর্মকর্তা। তার মতে, ‘নিরাপত্তা নিয়ে হুমকির বিষয়টি পিসিবি এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর উপেক্ষা করতে পারে না।’ যুদ্ধাপরাধ মামলায় অভিযুক্ত কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে পাকিস্তানবিরোধী মনোভাব বাংলাদেশে তীব্র হয়েছে, সে প্রসঙ্গ পর্যন্ত উল্লেখ করেছে ওই সূত্র। তবে এসিসি’র সভার পর পিসিবি’র এই বক্তব্যের ভিত্তি খুঁজে পাচ্ছেন না বিসিবি’র ভারপ্রাপ্ত সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন। তার মতে, ‘এই কথা তো পিসিবি’র শীর্ষস্থানীয় কারো মুখ থেকে উচ্চারিত হয়নি। এমনকি সংবাদে সূত্রের নামও উল্লেখ করা হয়নি। প্রয়োজনে আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। পাকিস্তানকে কীভাবে আনা যায়, আমাদের তরফ থেকে সে চেষ্টা করা হবে। পাকিস্তান এখানে এসে এশিয়া কাপ খেলবে, আমরা সে ব্যাপারে আশাবাদি। এসিসি’র প্রধান নির্বাহী সৈয়দ আশরাফুল হকও বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় এশিয়া কাপে পাকিস্তানের অংশগ্রহণ নিয়ে আশাবাদি। তিনি বলেছেন, ‘এসিসি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে পিসিবিরও অংশগ্রহণ ছিল। সে সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেনি পিসিবি। এটাই আমাদের পারস্পরিক বোঝাপড়া। পাকিস্তান যে অংশ নেবে, সে ব্যাপারে আমরা আশাবাদি। এশিয়া কাপে পাকিস্তান অংশ না নিলে প্রকারান্তরে ক্ষতি হবে তাদের। অংশগ্রহণ ফি খাতে ২০ লাখ মার্কিন ডলার হাতছাড়া হবে পিসিবি’র। আর্থিক সংকটে জর্জরিত পিসিবি নিশ্চয়ই সেটা চাইবে না। এশিয়া কাপে খেলে টি-২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি, কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার এমন সুযোগ হাতছাড়া করবে কেন পাকিস্তান? ইতিপূর্বে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এশিয়ার কাপের তিন আসরের দু’টি’র শিরোপা পাকিস্তানের- এমন লাকি ভেন্যুতে এশিয়া কাপ না খেলার কোনো কারণই দেখছে না বিসিবি।খবর রেডিও তেহরানর #