একযোগে এগিয়ে এসে জামায়াত শিবিরের সহিংসতা প্রতিরোধ করতে হবে

kaziকাজী নাসির উদ্দীন, সাতক্ষীরাঃসহিংসতা প্রতিরোধে সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানানোর মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। র“খে দাড়াও বাংলাদেশ’র আয়োজনে রোববার বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কের শহীদ মিনারের পাদদেশে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নাছিম ময়নার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবেদ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জিয়াউর রহমান, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব জিয়াউদ্দীন তারিক আলি, তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সানজীদা আক্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন ও নাট্য শিল্পী রোকেয়া প্রাচী প্রমূখ ।

সমাবেশে সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, ৭১ সালের পরাজিত শক্তি বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুর“ করেছে। সাতক্ষীরায় জামায়াত-শিবির যে সহিংসতা চালিয়েছে তা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শুর“ হওয়ার পর এবং স্ঈাদীর রায় ঘোষণার পর থেকে জামায়াত-শিবির এই তান্ডব শুর“ করে। নির্বাচনের কথা বলে এই সহিংসতা অস্বীকার করা যাবে না। আমাদের ভাবতে হবে এই সহিংসতা আমরা মেনে নেব কি না। স্বাধীন এই দেশে  রাজাকাররা বিজয় চিহ্ন দেখাতে পারে না, বিজয় চিহ্ন দেখাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নির্মূল করতে হবে। মুক্তিযদ্ধের সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে হবে। বাংলার মানুষই স্বাধীনতাবিরোধীদের র“খে দাড়াবে। ষড়যন্ত্রকারিরা সাতক্ষীরায় যে সহিংসতা চালিয়েছে তা র“খতে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দৃড়তার সাথে কাজ করার আহবান জানান। তা না হলে এই দেশকে পরাজিত শক্তিগুলোর হাত থেকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। বক্তারা আরও বলেন, বিরোধীদল জামায়াত-শিবিরকে পুনর্বাসন করছে। এই দেশ ও দেশের মানুষকে সম্মুখে এগিয়ে যে যে ¯—রে বসে আছে সেখান থেকে কাজ করতে হবে। আর সেটি সম্ভব না হলে পরাজিত শক্তিরা আবারো মাথা চাড়া দেবে। যুদ্ধাপরাধিদের বিচার বানচাল করতে এই সহিংসতা করা হচ্ছে উলে­খ করে বলেন, রাস্ট্রের প্রতিটি নাগরিককে এগিয়ে আসা এখন নীতিগত দায়িত্ব হিসেবে র“প নিয়েছে। সমাবেশে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, যুদ্ধাপরাধের বিচার ত্বরান্বিত করা ও রায় দ্র“ত কার্যকর করা, দেশকে তালেবানি রাষ্ট্র বানানোর পায়তারার বির“দ্ধে র“খে দাড়ানো, নারীর অধিকার সমুন্নত ও মুক্ত চিন্তার পথ খোলা রেখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহবান জানানো হয়।

সমাবেশে অধ্যাপক ড. সানজীদা আক্তার বলেন, যেখানে এই সাতক্ষীরার মাটিতে গোলাম আজমের ঠাই হয়নি। সেখানে স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ বারবার মার খাবে, এটা মেনে নেয়া যায় না। আমাদের আগে মনে প্রাণে বাঙালি হতে হবে, তা না হলে আমরা বাংলাদেশের মানচিত্র রক্ষা করতে পারবো না।

বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব রোকেয়া প্রাচী বলেন, সংগ্রাম এক দিনে হয় না। সংগ্রাম থাকে বুকের ভেতর। সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের তান্ডবের প্রতিবাদ শুর“ হয়েছে। বিরোধীদল জামায়াত-শিবিরকে পুনর্বাসন করেছে। সেদিনের সেই চারা আজ বিষবৃক্ষে পরিণত হয়েছে। আর চুপ থাকলে চলবে না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে এই সহিংসতা চালানো হচ্ছে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে র“খে দাড়াতে হবে। আমরা আপনাদের পাশে, আছি – থাকব।

দুপুরে সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কের সমাবেশ শেষে নেতৃবৃন্দ আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা বাজারস্থ শহীদ মিনার চত্বরে আরেক দফা সমাবেশ করেন। সেখানে সমাবেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে একত্রিত হয়ে জামায়াত শিবিরের নারকীয় তান্ডবের জবাব দেয়ার আহবান জানান বক্তারা। এসময় র“খে দাড়াও বাংলাদেশ এর নেতৃবৃন্দ স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থ স্থান ও ব্যক্তিবর্গের সাথে কথা বলে খোজ খবর নেয়ার পাশাপাশি তাদেরকে শান্তনা দেন। নেতৃবৃন্দ সেখান থেকে ফিরে সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজে এসে বিরতির পর বিকাল সাড়ে ৩ টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে সাতক্ষীরা ত্যাগ করেন। এসময় স্থানীয় সাংবাদিকরা তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করেন।

 

Exit mobile version