জি নিউজঃ-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাচলতি বছরের হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন । শুক্রবার সকালে রাজধানীর উত্তরার আশকোনা হজ ক্যাম্পে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এর উদ্বোধন করেন। আজ শনিবার থেকে বিমানের প্রথম হজ ফ্লাইট শুরু হবে। হজ কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী ইসলামের নাম ব্যবহার করে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কর্মকান্ড ঠেকাতে সজাগ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ইসলাম অত্যন্ত পবিত্র ও শান্তির ধর্ম। আমার খুব দুঃখ হয় যখন আমরা দেখি এই শান্তির ধর্ম, পবিত্র ধর্মের নাম নিয়ে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করে ইসলামেরই দুর্নাম করা হয়। আমি আশা করি, যারা এসব কাজে লিপ্ত তারা এ কাজ থেকে বিরত হবেন। ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া কোনো শিক্ষাই পূর্ণাঙ্গ হতে পারে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা শিক্ষানীতি গ্রহণ করেছি। পার্থিব শিক্ষা ও ধর্মীয় শিক্ষা যেন আমরা নিতে পারি সে পদক্ষেপ নিয়েছি। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ সংস্কারের জন্য সৌদি সরকারের আর্থিক সহায়তার কথা স্মরণ কওে সৌদি বাদশাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, প্রত্যেক জেলায় একটি করে মসজিদকে আমরা উন্নতমানের মসজিদ হিসেবে গড়ে তুলব। পর্যায়ক্রমিকভাবে প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে উপজেলাভিত্তিক মসজিদ হবে। সব থেকে সুন্দর ও উন্নতমানের মসজিদ আমরা তৈরি করব। অথবা যে মসজিদ আছে তার মান উন্নত করব। এ বিষয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সৌদি রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ এনএ আল বুশাইরির দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলাম যে সত্যিকারের শান্তির ধর্ম তার প্রচার ও প্রসারে আমরা পদক্ষেপ নেব। সৌদি সরকার যদি এই মসজিদ উন্নয়নে আমাদের সহায়তা করে, তাহলে এ কাজটা আরও ভালো হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। ইসলামের প্রচার ও প্রসারে এবং ধর্ম চর্চায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের নেয়া বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-ের কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, বিএনপি-জামায়াত চারদলীয় জোট সরকারের শেষ বছর ২০০৬ সালে হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৪৭ হাজার ৯৮৩। গত বছর ১ লাখ ৯ হাজার ৯৫২ এবং ২০১১ সালে ১ লাখ ৫ হাজার ৬১৭ জন হজ পালন করেন। আর চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৮ হাজার ৯১১ জন হজে যাচ্ছেন। সৌদি আরবে সংস্কার কাজ চলায় যারা গত পাঁচ বছরে হজ করেছেন তারা আর এ বছর হজে যেতে পারছেন না। এছাড়া সৌদি সরকার এবার বাংলাদেশের কোটা থেকে হজে যাওয়ার সুযোগ ২০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। সব দেশের জন্যই এটা করা হয়েছে। এ কারণে এবার হজযাত্রীর সংখ্যা কিছুটা কমেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে জাতীয় হজনীতি ২০১০-১৪ প্রণয়নের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ হজব্রত পালন যেমন সুনিয়ন্ত্রিত পদ্ধতির আওতায় এসেছে, তেমনি প্রশাসনিক কাজে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে।’ ২০০৯, ২০১০, ২০১১ ও ২০১২ সালে উন্নত হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি হজ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ‘শ্রেষ্ঠ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে এবং হজ কর্মকর্তা বজলুল হক বিশ্বাসের পরিচালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিমানমন্ত্রী ফারুক খান, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী সাহারা খাতুন এবং বাংলাদেশে সৌদি রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আল বুশাইরি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ধর্ম সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল। পরে প্রধানমন্ত্রী ঘুরে ঘুরে হজযাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এছাড়া বিমানের অপারেশন বিভাগের পরিচালক শাহনেওয়াজ জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এবার হজযাত্রী পরিবহনে মোট ৯২টি ‘ডেডিকেটেড ফ্লাইট’ চালাবে বিমান। এছাড়া ২২টি নিয়মিত ফ্লাইটেও হজযাত্রী পরিবহন করা হবে। এবছরও চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে হজযাত্রী পরিবহন করবে বিমান। সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী মোট হজযাত্রীর অর্ধেক বহন করবে বিমান। বাকি অর্ধেক করবে সৌদি এয়ারলাইন্স এবং নাস এয়ারওয়েজ। বিমানের ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১৯ অক্টোবর থেকে। এছাড়া সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের হজ ফ্লাইট শুরু হবে ৮ সেপ্টেম্বর। আর ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ২১ অক্টোবর। হজের ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে ১৮ নভেম্বর ,