অনলাইন ডেস্ক, জি নিউজঃ- আবার রক্তাক্ত হয়েছে মিশরের রাজপথ। ১৯৭৩ সালের মিশর-ইসরাইল যুদ্ধ শুরুর বার্ষিকীতে ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারী জনতার ওপর পুলিশের নির্বিচার গুলিবর্ষণে অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের প্রায় সবাই ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসির সমর্থক। ১৯৭৩ সালের ৬ অক্টোবর থেকে মিশর-ইসরাইল যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে হাতছাড়া হয়ে যাওয়া এলাকা পুনরুদ্ধারের জন্য মিশরের সেনাবাহিনী সুয়েজ খাল অতিক্রম করলে ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধ শুরু হয়। ১৮ দিন স্থায়ী এ যুদ্ধ ‘অক্টোবর যুদ্ধ’ নামেও প্রসিদ্ধ। ওই যুদ্ধ শুরুর বার্ষিকীতে সেনাবাহিনী একদিকে রাজধানীতে সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করে। অন্যদিকে মুরসির সমর্থক ইখওয়ানুল মুসলিমিন ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভের ডাক দেয়। তারা খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঐতিহাসিক তাহরির স্কয়ারের দখল নিতে চাইলে নিরাপত্তা বাহিনী নির্বিচারে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায়। এতে সেখানে অন্তত ৩২ জন এবং কায়রোর দক্ষিণ অংশে আরো দু’জন নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছে অপর প্রায় ১০০ জন। কায়রোর একটি হাসপাতাল সূত্র হতাহতের এ সংখ্যা নিশ্চিত করেছে। কায়রোর কেন্দ্রস্থলে বিক্ষোভকারী জনতাকে লক্ষ্য করে পুলিশ সরাসরি গুলি চালায়। অনেক বিক্ষোভকারীকে পুলিশ আটক করে বেদম প্রহার করে। কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে পুলিশ পিটিয়ে মেরে ফেলেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। গত ১৪ আগস্টের পর রোববার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সর্বোচ্চ সংখ্যক বিরোধী নেতাকর্মী নিহত হলেন। ১৪ আগস্ট মিশরের পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গুলিতে অন্তত তিন হাজার বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছিলেন। ওই দমন অভিযানের পর মুরসির সমর্থক ইখওয়ানুল মুসলিমিনের নেতা-কর্মীরা কিছুটা দমে গেলেও গত কয়েকদিন ধরে তারা আবার সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করেন। রোববার ইখওয়ানের সমর্থকরা তাহরির স্কয়ারের দখল নেয়ার পরিকল্পনা করলেও বুলেটের সামনে তারা দাঁড়াতে পারেননি। ১৯৭৩ সালের অক্টোবরের যুদ্ধে মিশর প্রথমে বেশ সাফল্য পায়। সুয়েজের মতো কঠিন বাধা অতিক্রম করে মিশরীয় বাহিনী পৃথিবীর যুদ্ধ ইতিহাসের এক দুঃসাহসিক আক্রমণে ইসরাইলের দুর্ভেদ্য প্রতিরক্ষা ব্যূহ হিসেবে খ্যাত বারলেভ লাইন সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত করে বিদ্যুত্গতিতে সামনে এগিয়ে চলে। এ অবস্থায় প্রমাদ গণে দখলদার ইসরাইলের দুই পৃষ্ঠপোষক আমেরিকা ও রাশিয়া। নিজেদের মধ্যে শীতল যুদ্ধ চলা সত্ত্বেও বিপর্যস্ত ইসরাইলকে রক্ষার জন্য মস্কো ও ওয়াশিংটন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের দুই প্রভুর আশীর্বাদে অচিরেই ইসরাইল ধাক্কা সামলে ওঠে এবং জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘটে।খবর রেডিও তেহরান এর রবিবার তাঃ-, 0৬ অক্টোবার ২০১৩