জানা গেছে, গোবরের কম্পোস্ট সার খুবই উৎকৃষ্ট হওয়ায় কৃষকরা জমিতে গোবর দিয়ে ভাল ফলন ফলিয়ে থাকে। ফলে সবসময়ই কৃষকদের মাঝে গোবরের কদর ব্যাপকভাবে দেখা যায়। যাদের গরু আছে কিন্তু আবাদি জমি নেই তারাও কৃষকদের কাছে গোবর বিক্রি করত। কিন্তু বর্তমানে কৃষকদের গোবরে ভাগ বসিয়েছে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মহিলারা। তারা জ্বালানীর বিকল্প হিসেবে গোবর ব্যবহার করছেন। গোবরের তৈরি লাকড়ি দিয়ে নিজেদের জ্বালানী সমস্যার সমাধান করেও বাজারে বিক্রি করে সংসারের অভাব দূর করছেন। এ উপজেলায় দিনদিন জ্বালানী সঙ্কট মারাতœক আকার ধারণ করছে। জ্বালানী সঙ্কটের কারণে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পোহাতে হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র জনগোষ্ঠির পরিবারগুলোকে। জ্বালানীর অভাবে চুলা জ্বালাতে পারছেনা দরিদ্র গৃহিণীরা। দফায় দফায় গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকেই গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। যার ফলে জ্বালানী কাঠের উপর দিন দিন চাপ বেড়েই চলেছে। এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে গোবরের তৈরি মুইঠ্যা বা শলার লাকড়ি। বর্তমানে জ্বালানী সঙ্কট মোকাবেলায় শলায় তৈরি গোবরের লাকড়ি ব্যবহার হচ্ছে পুরোদমে। আর গোবরের লাকড়ি দিয়ে নিজেদের জ্বালানীর চাহিদা মেটানোর পর বিক্রি করে অভাব দূর করছেন অভাবগ্রস্থ পরিবারের গৃহিণীরা।
শলায় তৈরি গোবরের লাকড়ি এমন এক প্রকার জ্বালানী যা তৈরি করা খুবই সহজ। খরচও কম এবং পরিবেশের কোন ক্ষতি করেনা। পরিবেশ সহায়ক এ জ্বালানী তৈরিতে উপকরণ হিসেবে প্রয়োজন গরু বা মহিষের গোবর, পাটখড়ি, ধানের তুষ (কুড়া)। গোবরের লাকড়ি তৈরির আগে পরিমাপ মতো পাটখড়ি কেটে গোবর ও তুষ (কুড়া) একত্রে মিশিয়ে পাটখড়ির সঙ্গে এঁেট রোদে শুকাতে হয়। এছাড়াও মুঠো করে ঘষি বানিয়ে রোদে শুকিয়েও ব্যবহার করা যায়। কিছুদিন আগেও এর ব্যবহার ছিল গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠির মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু বর্তমানে জ্বালানী সংকট ও দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন গ্রাম ছেড়ে শহরেও গোবরের লাকড়ির কদর বেড়েছে। প্রায় সব শ্রেণীর মানুষ এ গোবরের লাকড়ি ¯^ল্পমূল্যে কিনে জ্বালানী হিসেবে রান্নার কাজে ব্যবহার করছে। গ্রামীণ দরিদ্র পরিবারের মহিলারা এই গোবরের লাকড়ি বা মুইঠ্যা তৈরি করে নিজেদের জ্বালানীর চাহিদা মিটিয়েও বিক্রি করে সংসারের খরচ চালিয়ে ¯^চ্ছলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন।