জি নিউজঃ-আজ সেই ২১ শে আগস্ট। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে বিভীষিকাময় রক্তাক্ত গ্রেনেড হামলার নবম বার্ষিকী বুধবার। বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি জঘন্যতম হত্যাকান্ডের দিন, আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টার দিন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে কলঙ্কময় অধ্যায় রচনার দিন। ভয়াবহ সেই গ্রেনেড হামলার নয় বছর পূর্তি হলো আজ বুধবার। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায় জঙ্গিগোষ্ঠী হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ-হুজি’র নেতা-কর্মীরা। নয় বছরে মামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হয়েছে এবং বিচার শুরু হয়ে এখন তা শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ২১ আগস্টের ওই হামলায় মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ নিহত হন আওয়ামী লীগের ২৪ নেতা-কর্মী। আহত হন শতাধিক। তদন্তে জানা গেছে, এমন নারকীয় ঘটনার মূল উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করা। তাঁকে উদ্দেশ্য করেই গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। অল্পের জন্য তিনি প্রাণে রক্ষা পেলেও আহত হন। একটি কানের শ্রবণশক্তি হারান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমন একটি বীভৎস ঘটনার বিচার এখন পর্যন্ত কেনো শেষ তা নিয়ে প্রশ্ন আছে সচেতন নাগরিক মহলে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশের আয়োজন করে। প্রধান অতিথি ছিলেন দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সমাবেশে শেখ হাসিনার বক্তব্যের শেষ মুহূর্তে বিকাল ৫টা ২২ মিনিটে দক্ষিণ দিক থেকে মঞ্চকে লক্ষ্য করে একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। গ্রেনেডটি মঞ্চের পাশে রাস্তার ওপর পড়ে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। পরে একে একে আরো ১২টি গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটে। মোট তিন দফা তদন্ত হয়েছে গ্রেনেড হামলার। প্রথমে হয় বিএনপি-জামায়াতের জোট সরকারের আমলে, কিন্তু কোনো প্রতিবেদন দাখিল হয়নি তখন। বরং ওই সরকারের নির্দেশে তদন্ত কর্মকর্তারা মামলাটিকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করেন। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু ওই তদন্তে গ্রেনেডের উৎস ও গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনার পেছনে কারা জড়িত, তা উদঘাটন করা হয়নি অভিযোগে বর্তমান সরকারের আমলে আবার তদন্ত শুরু হয়। এছাড়া চার্জশিট দেয়ার আগে থেকেই আসামিদের অনেকেই জেল হাজতে রয়েছেন। রাজনৈতিক নেতা এবং প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা এই মামলায় জেল খাটছেন । মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন। এখন পর্যন্ত ৭২ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য দিয়েছেন বলে জানা গেছে, এবারের বিভীষিকাময় ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস পালনে আওয়ামী লীগ দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের বেদীতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করবেন। সোমবার বিকেলে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট মৃনাল কান্তি দাস সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী বুধবার সকাল ১১টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ বেদীতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশগ্রহণ করবেন। এই সময় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দও অনুরূপ কর্মসুচিতে যোগদান করবেন। একই স্থানে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও আহতদের সাথে সাক্ষাৎ এবং আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করবেন।
জি নিউজ/তা;-২১ আগস্ট ২০১৩